ভলিউম দেখতে পোষ্টের নিচে যান
পূর্ব সুয়োজে আরো একটি সংক্ষিপ্ত অভিযান করেছিলেন সুলতান
সুলেমান। মিশরে অটোষানদের জয়ের পর থেকে এর খ্রিস্টান শক্তিরা
পর্তুগিজদের সাহায্যে কামনা করে আসছিল তুর্কিদের বিরুদ্ধে । এর উত্তরে
১৫৪০ সালে ভাক্ষো-দা-গামার পুত্রের নেতৃত্ে পর্তুগিজরা আবিসিনিয়াতে
সেনাবাহিনী পাঠায়। কাকতালীয় এ সময় এখানকার ক্ষমতায় ছিল তরুণ রাজা
ক্লুডিয়াস।
পর্তুগিজদের সাথে নিয়ে ব্লডিয়াসের এই অভিযান হারিয়ে দেয়ার
জন্য ১৫৫৭ সালে সুলতান সুলেমান লোহিত সাগরের দুর্গ মাসাওয়া দখল করে
নেন। ক্লডিয়াস পালিয়ে যায় ও দুইবছর পর যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করে। আর
কখনোই এই পর্বত ভূমি মুসলিম প্রতিবেশীদের কোনো হুমকির কারণ হয়নি ।
বারবারোসার মৃত্যুর পর ভূমধ্যসাগরে ড্রাগুত সুলতানের জাহাজ বহরের
প্রধান আ্যাডমিরাল হিসেবে নিয়োগ পায়।
প্রথমেই জেরুজালেমের সেন্ট জন
নাইটদের বিরুদ্ধে অগ্রসর হয় ড্রাণ্তত ১৫৫১ সালে। এখানে নাইটদের
পরাজিত করে ব্রিপোলী দখল করে এর গভর্নর হিসেবে নিয়োজিত হয় ড্রাগুত।
১৫৫৮ সালে সম্রাট পঞ্চম চার্লসের মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী ও পুত্র
দ্বিতীয় ফিলিপ ত্রিপোলী পুনর্দখলের জন্য মেসিনাতে বৃহৎ এক খ্রিস্টান সৈন্য
বহর প্রস্তুত করে। কিন্তু তাকে বিস্মিত করে বিশাল এক অটোমান বহর এসে
পড়ে সময়মতো । গোল্ডেন হর্নে আগত অটোমান বহর দেখে আতঙ্কিত হয়ে
খ্রিস্টান যোদ্ধারা ইটালিতে বাড়ির পথ ধরে। এই পরাজয়ে সমস্ত থিস্টান
শক্তিসমূহের মাথা নিচু হয়ে পড়ে। এরপর দ্রাণ্তত তার বাহিনী নিয়ে জিব্রাল্টার
প্রণালি হয়ে আটলান্টিকে পাড়ি জমায়।
এর ফলে ধ্রিস্টানদের শক্তিশালী দখলে থাকা মাল্টায় প্রবেশের পথ খুলে
যায়। ভূমধ্যসাগরে রাজত্ব করার জন্য সর্বশেষ এ বাধা অতিক্রম করার জন্য
সুলতান সুলেমানকে কন্যা মিরিমাহ্ চাপ দিতে থাকে ।
কিন্তু সত্তুর বছর বয়সী বৃদ্ধ সুলতান সুলেমান একা মাল্টার বিরুদ্ধে
অভিযান পরিচালনা করতে সাহস না পেয়ে নৌবাহিনীর দায়িত্ব অর্পণ করেন
তরুণ প্রধান আ্যাডমিরাল পায়েল পাশা ও স্থলবাহিনীর দায়িত্ দেন মুস্তাফা
পাশার ওপর।
কিন্তু ভূমধ্যসাগরে যুদ্ধ করার ওপর ড্রাগুতের দক্ষতার ওপর সুলতান
বিশেষভাবে ভরসা করেন। আর তাই ড্রাণ্তত ও উলুজ আলীকে এ অভিযানের
পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগ দান করেন।
তাদের প্রধান শত্রু নাইটদের সেনাপ্রধান জ্যা দে লা ভ্যালে, একজন
পরিশ্রমী ও উন্মাদ খ্রিস্ট বিশ্বাসী যোদ্ধা। সুলেমানের সাথে একই বছরে
জন্গ্রহণ করা ভ্যালে একজন দক্ষ সেনাপ্রধান ও একই সাথে ধর্মপ্রাণ নেতা ।
দুর্ঘবেষ্টিত শহর মাল্টাতে প্রধান বন্দর মার্সা। তুর্কিদের সম্ভাব্য আক্রমণ
ঠেকাতে এখানে অবস্থিত সেন্ট আ্যাঞ্জোলো ও সেন্ট মাইকেল দুর্গের পাশাপাশি
নতুন দুর্ঘ সেন্ট এলমো তৈরি করা হয়। এই নতুন দুর্ের নকশা এমন হয় যে প্রধান
বন্দর, মধ্য পোতাশ্রয় বা মার্সা মাক্কেট উভয়কেই নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব হবে।
১৫৬৫ সালের মে মাসের ১৮ তারিখে মাল্টায় দিগন্তে শক্রবহর দেখা
দেয়। কিন্তু অভিযানের প্রথম থেকে সুলতানের অনুপস্থিতিতে পায়েল ও মুস্তাফা
পাশার মাঝে বিভিন্ন মতভেদ দেখা দিতে থাকে । পায়েল পাশার দাবি অনুযায়ী
জাহাজ বহরের নিরাপদ নোঙ্গরের সেন্ট এলমোকে প্রথমেই অবরোধের সিদ্ধান্ত
নেয়া হয়। অন্যদিকে নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে দুই সপ্তাহ পরে আসে ড্রাণ্তত।