পানির নিচে তিমি কীভাবে বাচ্চাকে স্তন্যপান করায়?

যেসব স্তন্যপায়ী জলে থাকে সাধারণ ভাবে তাদের শিশুদের মাতৃদুগ্ধ পানের পদ্ধতিতে প্রজাতি অনুযায়ী কিছু পার্থক্য থাকলেও মূল পদ্ধতিটি একই রকম।
শিশু তিমি দুই বছর পর্যন্ত মাতৃদুগ্ধ পান করে। কয়েকটি প্রজাতির তিমির ক্ষেত্রে এই সময় আরও কম। তিমি মায়ের দুধে প্রচুর পরিমাণে স্নেহ পদার্থ থাকে। তিমির চামড়ার নীচে ব্লাবার নামের যে স্নেহ পদার্থ সমৃদ্ধ পুরু স্তর দেখা যায় সেটা তৈরির পেছনে এই দুধের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিমির স্তন গ্রন্থির আকৃতি ও শিশু তিমির স্তন পান পদ্ধতি হাইড্রোডাইনামিক্সের নিয়ম অনুযায়ী অভিযোজিত হয়েছে। পুরুষ ও স্ত্রী প্রজাতির যৌন অঙ্গ গুলো দেহ ত্বকের ভিতরে ঢুকে থাকে। এমনিতে বাইরে থেকে দেখে স্ত্রী ও পুরুষের তফাৎ করা সহজ নয়। সাধারণত স্ত্রীদের যোনি ছিদ্রটি পায়ুছিদ্রের কাছে থাকে কিন্তু পুরুষের ক্ষেত্রে জনন ছিদ্রটি (পুং জনন অঙ্গ এর ভিতরে ঢুকে থাকে) নাভির কাছে থাকে। স্ত্রী তিমির দুটি স্তন গ্রন্থি থাকে এবং সেগুলো যোনির দুই পাশে যোনি ছিদ্রের সমান্তরাল ভাবে অবস্থান করে। (ফটো দেখুন)

স্তনবৃনত দুটি এমনিতে ভিতরে ঢুকে থাকে, বাইরে থেকে দেখা যায় না। কিন্তু স্তন পান করানোর সময় সন্তানের মুখের স্পর্শে স্তনবৃন্ত বাইরে বেরিয়ে আসে।এটি এক ধরনের প্রতিবর্ত ক্রিয়া। স্তন্যপায়ীদের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল তাদের নরম ঠোঁট। এর সাহায্যে তারা মাতৃস্তন থেকে চুষে দুধ পান করতে পারে। তিমির সমস্যা হল সে স্তনবৃন্তকে আঁকড়ে ধরার জন্য উপযুক্ত ঠোঁটের অধিকারী নয়। তাই এখানে মাতৃদুগ্ধ পানের পদ্ধতিতে একটি বিশেষ অভিযোজন দেখা যায়। শিশু তিমি মায়ের স্তনবৃন্ত মুখে নিতেই মা তিমি স্থানীয় পেশীর সংকোচনের মাধ্যমে সরাসরি শিশুর মুখে দুধ নিক্ষেপ করতে পারে। নির্দিষ্ট কিছু পেশীর সংকোচনের মাধ্যমে মানুষের মূত্রত্যাগের পদ্ধতির সাথে বিষয়টির তুলনা করা যায়।
ধন্যবাদ।