বারবারোসলার(বারবারোসা)পর্ব ৭ বাংলা সাবটাইটেল – Barbaroslar Bangla Subtitles

দ্যা আটোম্যান সেঞ্চুরিস পর্ব ৭

চতুদর্শ শতাব্দীর ভ্রমণকারী ইবনে বতুতা এ সম্পর্কে লিখে গেছেন এভাবে :

পৃথিবীর আর কোথাও তাদের মতো খুঁজে পাওয়া যাবে না। এরা আগত্ুক
অতিথির জন্য এতটা উৎ্কপ্িত থাকে, সত্তুষ্টি না আসা পর্যন্ত খাবার পরিবেশন
তাদের দোসরদের হত্যা করে। তাদের বাগধারা অনুযায়ী একজন আখি-কেই
(81) তার ব্যবসায়ী বন্ধুরা অবিবাহিত পুরুষ ও অন্যান্য যারা জীবনের

বিবর্ণ কাপড় পরিহিত একজন মুচির আমন্ত্রণে ইবনে বতুতা এক গৃহে
ভ্রমণ করছিলেন যেখানে জুতা প্রস্তুতকারী ছিল তরুণ আখিদের শেখ এবং
এছাড়াও জড়ো হয়েছিল দুইশ জন বিভিন্ন পেশার বণিক। এ সম্পর্কে ইবনে
বতুতা লিখে গেছেন এভাবে,

এটি সুদৃশ্য দালান, সুন্দর রুমী কার্পেট আচ্ছাদিত, ইরাকি কাচ দ্বারা
সজ্জিত….চেম্বারে ছিল সারি সারি তরুণ যাদের পরনে ছিল লম্বা কাপড় আর
পায়ে বুট জুতা….মাথায় ছিল সাদা উলের পাগড়ি, প্রতিটি পাগড়ির মাথায় ছিল
এক হাত লম্বা একটি জিনিস….আমার তাদের মাঝে আসন গ্রহণ করার পর
তারা বড় বড় পাত্রে করে নিয়ে আসে বিভিন্ন ফল আর মিষ্টান্ন । এরপরে তারা
নাচ এবং গান শুরু করে। তাদের সবকিছুর প্রতিই আমাদের শ্রদ্ধা জাগে আর
তাদের দয়া এবং অন্তরের মহত্ব আমাদের মুগ্ধ করে তোলে।

সুলতান অর্থান বার্সাতে ইবনে বতৃতাকে স্বাগত জানান যিনি ছিলেন
তুর্কমান রাজাদের মাঝে সবচেয়ে বিখ্যাত এবং ধন-দৌলত জমি এবং সামরিক
শক্তির দিক দিয়ে সবচেয়ে সম্পদশালী । তার অধীনে থাকা দুর্গের সংখ্যা ছিল
প্রায় ১০০ এবং তিনি আরো বেশি নির্মাণে সবসময় ব্যস্ত থাকতেন… | এটি

বলা হয়ে থাকে যে তিনি কখনোই এক শহরে পুরো একটি মাসও কাটাননি।
তিনি নিয়মিত অবিশ্বাসীদের সাথে যুদ্ধ করতেন ও তাদের দমন করতেন ।

ওসমানের দুই ছেলের মাঝে অর্খান ছিলেন ছোট, যার নামকরণ হয়েছিল
সামরিক দক্ষতার কারণে । ওসমানের বড় ছেলে আলা-এদ-দিন ছিলেন
বিদ্যান্বেবী। আইন ও ধর্মের ক্ষেত্রে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। এক্ষেত্রে
কল্পকাহিনী প্রচলিত আছে যে তিনি ছোট ভাইয়ের দেয়া উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত
সম্পদ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

এ সম্পর্কে অর্খান লিখে গেছেন, “যেহেতু
আমার ভাই আমি তাকে যে পালও দল দিতে চেয়েছিলাম তা অস্বীকার
করেছেন তাহলে তিনিই হবেন ভেড়া পরিচালনকারী। তিনি আমার লোকদের
পথ দেখাবেন। আমার ভেজির হয়ে”। এই ক্ষমতাবলে তিনি ছিলেন
রাষ্ট্রের প্রশাসক, সেনাবাহিনীর প্রশাসক এবং নতুন আইনপ্রণেতা।

গাজীদের সুলতানের ছেলে, গাজীর ছেলে গাজী, পৃথিবীর হিরো ।1” এখানেই
প্রথমবারের মতো তিনি অটোমান রুপালি মুদ্রার প্রচলন করেন সেলজুক মুদ্রার
পরিবর্তে যাতে লেখা ছিল “ঈশ্বর অর্থানের ওসমানের ছেলে, সাম্রাজ্যকে
দীর্ঘস্থায়ী করুন। অর্খানের কাজ ছিল তার পিতার রেখে যাওয়া কাজ সমাধা
করা। একটি মিশ্র জনগোষ্ঠী যাদেরকে ওসমান নিজের চারপাশে জড়ো
করেছিলেন তাদের নিয়ে একটি সুদৃঢ় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা; আরো বিভিন্ন অভিযান
পরিচালনা করা ও নিজের আধিপত্য বৃদ্ধি করা; সব অধিবাসীকে একত্রে এনে
রাষ্ট্রকে অটোমান শক্তির কেন্দ্রে বসানো।

পিতার তুলনায় সুন্দর গাত্রবর্ণ
আচরণে আরো সভ্য এবং জাদুকরী প্রভাবের অর্খান ছিলেন স্বাদের ক্ষেত্রে
যতটা সাধারণ মেজাজের ক্ষেত্রে ততটাই নীতিবান। চারিত্রিকভাবেও তিনি
উন্মত্ত, ভয়ংকর অথবা ছলনাকারী ছিলেন না। ওসমানের তুলনায় তার দৃষ্টিভঙ্গি
ছিল সুবিস্তৃত এবং কাজকর্মে ছিলেন শক্তিশালী । ফলে যুদ্ধ অথবা রাষ্ট্রগঠন
উভয় ক্ষেত্রেই তিনি অর্জন করেছেন অনিঃশেষ শক্তি, উদ্দেশ্যে অর্জনে ছিলেন
একাগ্রমনা আর কুটনৈতিক দক্ষতা এবং জটিল সরকারব্যবস্থা সবকিছুতেই
ওসমানের ছিল অসম্ভব ক্ষমতা |

প্রথমে নিকাইয়া ও নিকোমেডিয়া উভয় শহরকে অধিগ্রহণের কথা ভাবেন
অর্থান। শহর দুটির প্রতিরক্ষা দেয়াল এতটাই মজবুত ছিল যে তারা দুর্গের
মতো ঝড়ের আক্রমণও ঠেকাতে পারত। বার্সার পতন হয়েছিল
কনস্টানিনোপল থেকে সহায়তার অভাবে । যখন অর্থান নিকাইয়ার দিকে
মনোযোগ দেন__শতবর্ষ পূর্বে এটি ছিল সাম্রাজ্যের রাজধানী । যখন ল্যাটিনরা
কনস্টান্টিনোপল অধিকারে রেখেছিল সম্রাট তৃতীয় আন্দ্রোনিকাস এ শহরকে
সাহায্য করা নিজের কর্তব্য বলে মনে করেন। কিন্তু ১৩২৯ খ্রিস্টাব্দে

২৯

অটোমানদের সাথে পেলিকাননের যুদ্ধে আহত হওয়ার পর তিনি তাড়াতাড়ি
যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে কনস্টান্টিনোপলে ফিরে যান। আর যেসব সৈন্য পশ্চাতে
ফেলে যান তাদের বেশির ভাগও তার অনুরণ করে । এভাবে নিকাইয়ার দুর্গের
পতন ঘটে। একইভাবে আট বছর পরে নিকোমেডিয়ও অর্খানের অধিকারে
আসে।

তিনটি শহরেরই পতনের পেছনে প্রধান কারণ ছিল অর্থনৈতিক।
নিজেদের উন্নয়নের জন্য এগুলোর প্রয়োজন ছিল চারপাশের অঞ্চলে যাতায়াত
করা। যখন এসব অঞ্চলে অটোমান শাসন কায়েম হয় কোনো লুষ্ঠনকারী
হিসেবে নয় বরং স্থায়ী বসবাসকারী হিসেবে, যেখানে কনস্টান্টিনোপলের
কিছুই করার থাকেনি ।

এর অধিবাসীদের সামনে আর কোনো পথ খোলা ছিল
না। এদের মাঝে অনেকেই সমর্পণ করার শর্তসমূহের সুবিধা নেয়নি,
কনস্টান্টিনোপেলে যায়নি। তারা যেখানে ছিল সেখানে থাকাটাই মনস্থির করে,
নিজেদের ব্যবসা এবং চাষবাস চালিয়ে যায়, পুরাতনের বদলে তাদের
চারপাশে যে নতুন জগৎ গড়ে উঠেছিল তাতে যোগদান করে। এভাবে
অর্থানের শাসনকালের শেষ দিকে তার রাষ্ট্রের জনসংখ্যা বেড়ে যায়, প্রায় অর্ধ
মিলিয়ন হয় সংখ্যায়, যা আর্তঘরুলের চারশ ঘোড়সওয়ারের চেয়ে অনেক
বেশি।

 

৭২০ রেজুলেসন

১০৮০ রেজুলেসন