বারবারোসলার ভলিউম ১৬ বাংলা সাবটাইটেল – অনুবাদ মিডিয়া

দ্যা আটোম্যান সেঞ্চুরিস পর্ব ১৬

তারপর খ্রিস্টান প্রজাদের সহায়তায় এর মাঝে ম্যানুয়েল পালাইয়োলগও
ছিলেন, বায়েজীদ কারামানিয়া আক্রমণ করে কন্যাকে ঘিরে ধরেন চারপাশ
থেকে। কারামানিয়া আক চাই-এর যুদ্ধে পরাজিত হয় এবং সাথে সাথে
কেয়সারি, সিঙায়, উত্তরে কাস্তামুনী অটোমানদের দখলে আসে । এর ফলে
কৃষ্ণ সাগরের বন্দরে প্রবেশের রাস্তা উন্ুক্ত হয়। এর মাধ্যমে বায়েজীদ
আত্মশ্রীঘায় ভুগতে থাকেন যে, তিনি এখন আনাতোলিয়ার বৃহৎ একটি অংশের
প্রভু।

কিন্তু এটি প্রকৃতপক্ষে সার্থক হয়নি। কেননা মুরাদ রাজনৈতিক প্রজ্ঞাবলে
খ্রিস্টান ইউরোপের বড় একটি অংশকে অটোমান শাসনতলে নিয়ে এসে
ছিলেন, যা খ্রিস্টান জনগণও মেনে নিয়েছিল কিন্তু বায়েজীদ-এর ততটা

রাজনৈতিক জ্ঞান না থাকায় আনাতোলিয়ার বৃহৎ অংশ অটোমানদের দখলে
আসে; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শাসনাতলে নয়।

বায়েজীদ ইউরোগীয় বিচারব্যবস্থায় অভ্যস্ত হওয়ার কারণে জয়ী
অঞ্চলসমূহে কী ধরনের সমস্যা উদ্ভুত হতে পারে, সে সম্পর্কে তার কোন
ধারণা ছিল না।

এশিয়া মাইনরে বিজয় কাজ সম্পন্ন করে নিজের গভর্নরদের ওপর শাসন
কাজ ন্যস্ত করে বায়েজীদ ইউরোপে ফিরে আসেন। এখানে হাঙ্গেরি কাছ থেকে
শক্রভাবাপন্ন মনোভাবের মুখোমুখি হন তিনি। হাঙ্গেরীর রাজা সিগিসমু্ড,
বায়েজীদের প্রধান শক্রতে পরিণত হয়। ইতিমধ্যে হাঙ্গেরিতে বায়েজীদ
উসকানিমূলকভাবে লুষ্ঠনকাজ করে বসেন এবং এর আশপাশের অঞ্চলে । ফলে
মধ্য ইউরোপে তুর্কিদের নিয়ে সবার মাঝে ভীতির সঞ্চার হয়। বায়েজীদের
সেনাবাহিনী দানিমুব নদী পার হয়ে হাঙ্গেরির মাটিতে প্রথম যুদ্ধ করে আর
এক্ষেত্রে মিত্র হিসেবে লাভ করে ওয়ালাসিয়ানদেরকে যারা হাঙ্গেরির অধীনতা
থেকে মুক্তি চাইছিল ।

এরই মাঝে সিগিসমুন্ড বায়েজীদের বিপক্ষে বুলগেরিয়ার আভ্যন্তরীণ
ব্যাপারে হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনে। এ অভিযোগের কোনো উত্তর না দিয়ে
বায়েজীদ নিজের তাবুতে ঝুলানো তরবারির প্রতি রাজার প্রতিনিধির দৃষ্টি
আকর্ষণ করেন।

সিগিসমুন্ড এর উত্তরে বুলগেরিয়া আক্রমণ করে বসেন। দানিয়ুব
নিকোপলিস দুর্গ দখল করে নিলেও বিপক্ষে থাকা বিশাল অটোমান
সৈন্যবাহিনীর কারণে আবার এ দুর্গ ত্যাগ করতে বাধ্য হয় সিগিসমুন্ড।
বায়েজীদ পিতা মুরাদের মতো সিসমানকে বিশ্বাস না করে হাঙ্গেরিয়ার বিপক্ষে
মৈত্রী না করে বরঞ্চ তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে বুলগেরিয়াকে অটোমান সাম্রাজ্যের
সাথে যুক্ত করে। খ্রেস এবং মেসিভোনিয়ার মতো বুলণেরিয়াও সাম্রাজ্যের
অংশে পরিণত হয়। ওয়ালাচারিয়া, থেস এবং মেসিডোনিয়া মিলে দানিয়ুবের
তীরে হাঙ্গেরির বিপক্ষে বাফার (997) গড়ে তোলে ।

এরপর বায়েজীদ
স্থানীয় এসব রাজবংশ উচ্ছেদ করে বলকান অঞ্চলে সাম্রাজ্যের শাসন
কেন্দ্রীভূত করার লক্ষ্যে অগ্রসর হন। এভাবে অটোমানদের সাথে একত্রীত
হওয়ার ফলে এবং ইসলাম গ্রহণ করার বুলগেরিয়া শুধু তার স্বাধীনতা
হারায়নিঃ বরঞ্চ জাতি হিসেবে বুলগেরীয় জনগণের প্রতীক অর্থডক্স চার্চও
হারায় । পূর্বে ল্যাটিন আচার-ব্যবস্থার অংশ থাকা এ গির্জা এবারে গিয়ে থিক অর্থডক্স
গির্জার হাতে । মুসলিম পাশাদের তুলনায় এ ব্যবস্থা ততটা সহনীয় ছিল না।

এরই মাঝে বায়েজীদ কনস্টান্টিনোপলের দিকে দৃষ্টি ফেরান। সম্রাট
পঞ্চম জন পালাইয়োলগের মৃত্যুর পর সন্তান ম্যানুয়েল ক্ষমতায় আরোহণ

করেন। ম্যানুয়েলের কাছে বায়েজীদ চরমপত্র পাঠান। প্রজাশর্ত পালনের
পাশাপাশি বার্ষিক করের পরিমাণ বৃদ্ধি এবং কনস্টান্টিনোপাল মুসলিম
জনগণের জন্য একটি কাদি বা বিচারালয় স্থাপন করতে হবে । এই চাহিদার
পাশাপাশি অটোমান সেনাবাহিনীর কনস্টান্টিনোপলের প্রধান দেয়াল পর্যন্ত
পৌছে যায়। পথিমধ্যে দক্ষিণ থেসে এমন সব গ্রিক জনগণকে কচুকাটা করে
তারা, যারা এখনো খ্রিস্টান ধর্ম পালন করত। এভাবে কনস্টান্টিনোপল ঘিরে
ধরে অটোমান বাহিনী ।

সাত মাস অবরুদ্ধ থাকার পর সম্রাট ম্যানুয়েল জোরপূর্বক রাজি হন
বায়েজীদের পূর্বের চেয়েও কঠিন সব শর্তে । গালাতা বন্দরের প্রায় অর্ধেক
অংশ ছয় হাজার অটোমান সৈন্য থাকার জন্যে দুর্গ নির্মাণকল্পে ছেড়ে দিতে
হয় ম্যানুয়েলকে। এ সময় থেকে দুইটি মসজিদের মিনার থেকে সারা
শহরজুড়ে মুসলিমরা প্রার্থনা করতে থাকে৷ একেই এখন ইস্তাম্বুল নামে
অভিহিত করা হয়। ১৩৯৫ সালে বায়েজীদ সেরেসে বিচার সভা বসান।
এখান থেকে সম্পূর্ণ পালাইয়োলগ পরিবারকে নিশ্চিহ্ করে দেওয়ার রায়
দেন। কিন্তু তার প্রধান আমির আলী পাশার সুবিবেচনায় আদেশ বিলম্ব
হতে থাকে এবং সুলতানের মনোভাব পরিবর্তিত হয়। মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে
বহু বাইজেন্টাইন উচ্চপদস্থ ব্যক্তির হাত কেটে চোখ উপড়ে ফেলা হয়।
এভাবে দ্বিতীয় ম্যানুয়েল রাজত্‌ করতে থাকেন এবং একজন যোগ্য শাসক
প্রমাণিত হন ।

এরই মাঝে হাঙ্গেরির রাজা সিগিসমুন্ডের কাছ থেকে বায়েজীদ নতুন করে
হুমকিস্বরূপ আচরণ পেতে থাকেন। অটোমান বাহিনীর আক্রমণ ও দানিয়ুবের
তীরে তাদের দুর্গ থেকে হুমকির কারণে সিগিসমুন্ড অন্যান্য পশ্চিমা ধিস্টান
শক্তিসমূহকে একত্রিত করতে চেষ্টা করতে থাকে তাদের দুঃখ-দুর্দশীর কারণ
হিসেবে । মুরাদের তুলনায় বায়েজীদ খিস্টানদের বিপক্ষে তার আচরণ সম্পর্কে
কম সচেতন ছিলেন। দাস্তিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে ইটালি থেকে আগত
দূতকে বায়েজীদ জানিয়ে দেন যে হাঙ্গেরি বিজয়ের পর তার পরবর্তী গন্তব্য
হবে রোম এবং সেন্ট পিটারস্রে বেদিতে নিজের ঘোড়াকে ছোলা খাওয়াবেন
বলেও জানিয়ে দেন। এ সময় থেকেই প্রকাশ্যে ধরিস্টান ধর্মের বিরুদ্ধে নিজের
বিরূপ মনোভাব প্রকাশ করতে থাকেন ।

তাই “ইউরোপ থেকে তুর্কি বিতাড়ন” অভিযানের পক্ষে নিজের মিত্র
সংগ্রহের জন্য সিগিসমুক্ড ফ্রান্সের প্রায় পাগল রাজা যষ্ঠ চার্লসের কাছে গোপানে
দূত পাঠান। রাজার চাচা ডিউক অব বারগান্ডি নিজের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য এ
প্রস্তাবে রাজি হয়ে নিজের তরুণ পুত্র কোতে দি নেভারস্-এর অধীনে ভাড়াটে
সৈনিক ও অশ্বারোহী সৈন্য পাঠাতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন।