সুলতান মেলিক শাহ
উয়ানিস বুয়ুক সেলজুকলু বা বাংলাতে নিজামী আলেম। সুলতান আর্প আসলাহান থেকে শুরু করে সুলতান আহমেদ সেনজার এর সময়কালের কাহিনী নিয়ে নির্মিত হয়েছে এই সিরিজ। অত্যাধুনিক ভিএফ এক্স, গভীর কাহিনী, অসাধারণ মেকিং, দৃষ্টিনন্দন সব লোকেশন, শক্তিশালী সংলাপ ও অভিনয়, টপ লেভেলের ফাইটিং এই সিরিজ কে অবশ্যই সেরাদের কাতারে নিয়ে যাবে।
সেঞ্জার ও তার মা বাসুল হাতুন
তুর্না হাতুন ও সেঞ্জার
এবার আসি কাহিনী সংক্ষেপেঃ
সিরিজটি শুরু হয় একটি অসাধারণ যুদ্ধের মাধ্যমে। সুলতান আর্প আসলাহান ও তার পুত্র মেলিক শাহ যুদ্ধের মাধ্যমে দারুন একটি বিজয় অর্জন করেন। যুদ্ধে বিজয়ের পর তারা রাজ প্রাসাদে ফিরে আসেন। সুলতান আর্প আসলাহানের পুত্র মেলিক শাহ গোপনে রাজ্যের এক অতি সাধারণ মেয়েকে বিয়ে করেন যে সম্পর্কটা সেই সময়ে কোনোভাবেই মেনে নেয়া হচ্ছিল না তখনকার রাজনৈতিক কারণে। রাজ্যের কথা বিবেচনা করে মেলিক শাহ তার স্ত্রীকে পাশের কিনিক বসতিতে রেখে আসে।তাদের প্রথম সন্তান মেলিক তপারকে রাজ প্রাসাদে রেখে আসে তার মা এবং পরবর্তিতে তাকে বলা হয় তার মা মারা গেছে যখন সে ছোট ছিলো।কিনিক বসতিতে থাকা অবস্থায় মেলিক শাহ তার স্ত্রীর সাথে দেখা করতেন। একবার সুলতান আর্প আসলাহান মেলিক শাহকে রাজ্যের কাজে অন্যত্র প্রেরন করেন এবং এরই মধ্যে মেলিক শাহের আরেকটি পুত্র হয়। সুলতান আর্প আসলাহান এর প্রধান পরামর্শক নিজামুল মুলক অনুধাবন করেন যে এই সন্তানের জন্য অন্যন্য রাষ্ট বিদ্রোহ শুরু করতে পারে কেননা সবাই জানে মেলিক শাহের সাথে তার স্ত্রীর কোন সম্পর্ক নেই।তাই নিজামুল মুলক মেলিক শাহের স্ত্রীর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন এবং পরবর্তীতে যখন মেলিক শাহ তার স্ত্রীর কাছে ফিরে আসেন তখন নিজামুল মুলক মেলিক শাহকে বলে যে তার স্ত্রী সন্তান জন্মদানের সময় মারা গিয়েছেন।এরই মধ্যে খবর আসে যে সুলতান আর্প আসলাহান কে হত্যা করা হয়েছে এবং নিয়ম অনুসারে মেলিক শাহকে সুলতান হতে হবে।নিজামুল মুলক তাকে তার সন্তান ও রাষ্ট্রের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে বলেন। সুলতান মেলিক শাহ তখন রাষ্ট্রকেই বেছে নেয়। নিজামুল মুলক কেন এ শর্তটি দেন তা আপনারা সিরিজটি দেখলেই বুঝতে পারবেন। নিজামুল মুলক, সুলতান মালিক শাহের ছেলের নাম রাখেন আহমেদ সেনজার।আহমেদ সেনজার তার মায়ের সাথে বসতিতে বড় হতে থাকে অপরদিকে তার ভাই মেলিক তপার রাজপ্রাসাদে বড় হতে থাকে। এই সময়ে সুলতান মেলিক শাহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন শত্রুর সাথে মোকাবেলা করে থাকেন। রাষ্ট্রের সব থেকে বড় শত্রু হলো বাতিনী নামক এক গুপ্ত সংগঠন। তাদের প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে সুলতান মেলিক শাহ এর রাষ্ট্রকে ধ্বংস করে তাদের নিজস্ব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। এজন্য তারা বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্রমূলক কাজ অব্যাহত রাখে। এক সময় তারা সুলতান কে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তাদের এই পরিকল্পনা ভেস্তে দেন সুলতান মেলিক শাহের সন্তান আহমেদ সেঞ্জার। পরবর্তীতে আহমেদ সেঞ্জার গুপ্তচর হিসেবে বাতিনিদের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। রাজ্যের বাহিরে যেমন শত্রু আছে তেমনি রাজ্যের অভ্যন্তরে, রাজপ্রাসাদের ভেতরেই আছে শত্রু যিনি সুলতানের খুবই কাছের লোক।সুলতান কিন্তু জানেন না কে এই গুপ্তচর। আহমেদ সেঞ্জার কি পারবে বাতিনিদের এই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে অথবা সুলতান মেলিক শাহ কি পারবে এই গুপ্তচর বের করতে? এর উত্তর পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই সিরিজটি দেখতে হবে। তবে আমি আপনাদেরকে বলে রাখছি এই দুই বিষয়ের উপরে কিন্তু সিরিজটি নির্ভর করছে না।সিরিজটির কাহিনী এত গভীর যে এটি বলে বোঝানো সম্ভব না।
বাতিনিদের গুপ্তচর হাসান সাব্বাহ
প্রতিটি পর্ব এমন জায়গায় শেষ হয়,পরের পর্বের জন্য আপনি নির্ঘাত পাগল হয়ে যাবেন। সম্পূর্ণ ভলিয়মে একটু পরপর টুইস্ট রাখা হয়েছে যার কারনে সিরিজটির আকর্ষন শতগুণ বেড়ে গেছে। ফাইটিং দৃশ্য গুলো খুব সুন্দর ও নিখুত ভাবে ধারন করা হয়েছে। আপনি এর একটি মাত্র খুঁত ধরতে পারবেন না। ইমোশনাল দৃশ্যগুলো আপনার চোখ দিয়ে পানি বের করেই ছাড়বে। সুলতান মেলিক শাহের শক্তিশালী ডায়লগ এবং তার সুলতানি লুকের জন্য আপনি তার ফ্যান হয়ে যাবেন। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকগুলো টপ লেভেলের হয়েছে।কিছু কিছু মিউজিক আপনার চোখে পানি নিয়ে আসবে আবার কিছু মিউজিক আপিনার লোম দাড় করিয়ে দেবে।
এই পর্যন্ত মাত্র ৭ টি ভলিউম রিলিজ হয়েছে।প্রতি সপ্তাহের সোমবার নতুন ভলিউম বের হয়।ইতিমধ্যেই প্রচুর সাড়া ফেলে দিয়েছে সিরিজটি।আইএমডিবির রেটিং ৮ এর উপরে আছে।কিছুদিন আগেও অনেকে কথা কাটাকাটি করত এই নিয়ে যে দিরিলিস আর্তুগুল সেরা নাকি কুরুলুস ওসমান সেরা । এখন নিঃস্বন্দেহে লড়াই হবে এই ৩ টি সিরিজের মধ্যে।